Breaking News

বিয়ে ছাড়াই বউ । পর্ব -০২

আমি নিশ্চিত এ মেয়ের কোনো বাজে ধান্দা আছে,

নাহলে এসব অদ্ভুত ধরনের ব্যবহার করে কেন?

তারপর বাধ্য হয়ে একটা রিক্সা ডাকলাম।

রিক্সায় উঠে আমি একটু চেপেই বসলাম। যাতে ওর সাথে বেশি ছোয়া না লাগে।

ডিজিটাল মেয়ে, কি থেকে আবার কি বলবে ঠিক নেই।

দিয়া - এই আপনি এতো চেপে বসলেন কেন?
নীল - এমনি।
দিয়া - হুহ ( একটু খানি আমার কাছে আসলো)
নীল - এই কি করছো? ওদিকে যাও।
দিয়া - আর জায়গা নেই,, তাই দুজন একসাথেই বসবো।
নীল - এই দেখো বড়দের মতো পাকনামী করবে না।
দিয়া - আমি ছোট নাকি?
নীল - হুম।
দিয়া - এই দেখুন ফাজলামো করবেন না কিন্তু, আমি ডিপ্লোমায় পড়ি,, সো আমি বাচ্চা মেয়ে নই।
নীল - বাব্বা,,
দিয়া - হু।

তারপর ঝামেলা টা কলেজে রেখে আসলাম। আর আমি বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে শরীর টা একটু ভালো লাগছে,, তাই ছাদে গেলাম,,
ছাদের ফুল গাছ গুলোতে পানি দিতে।
পানি দেওয়া শেষে হেডফোন লাগিয়ে ওখানেই বসে পড়লাম।
হালকা বাতাস আসছে তাই।
খুব ভালো লাগছে।
এভাবে দুপুর হয়ে গেল।
যখন ১ টা বাজে তখন আমার ঘর থেকে কি যেন ভাঙার শব্দ এলো।

বিশব্দটা এতো জুরে হইছে যে,
আমার হেডফোন ভেদ করে কানের কাছে চলে এলো,
তাই দৌড়ে নিচে গেলাম।
গিয়ে দেখি আমার পছন্দের ফুলদানি যেটা কয়েক দিন আগে
কিনে এনে টেবিলে রেখে দিছিলাম ওটা ওই দিয়া ভেঙে দিছে।
নীল - এটা কি হলো?
দিয়া - ভালই হইছে।
নীল - ভাঙলে কেন এটা?
দিয়া - বেশ করছি।
নীল - ভালভাবে কথা বলো।
দিয়া - আমাকে রেখে চলে আসলেন কেন?
নীল - আমি কি তোমার জন্য ওখানে দাড়িয়ে থাকবো?
দিয়া - হ্যাঁ হ্যাঁ থাকবেন।
নীল - হোয়াট??? কেন থাকবো?
দিয়া - কারণ, আমি,,
নীল - কি?
দিয়া - কিছু না।

নীল - শুধু শুধু আমার পছন্দের ফুলদানি টা ভেঙে দিলে!!
দিয়া - আপনি জানেন আমি একা আসার সময় কতগুলো
বদমাশ ছেলে রাস্তায় আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো আর কি যেন বলছিল।
নীল - তাকাবেই তো। এতো সুন্দর হইছো তারা কি তোমার দিকে না
তাকিয়ে ৭০ বছরের বুড়ির দিকে তাকাবে নাকি??
দিয়া - আপনিও বলছেন এ কথা??
নীল - বলবো না তো কি করবো,,, হিজাব বা বোরকা পরে চলতে পারো না।
দিয়া - আচ্ছা, তাহলে এরপর ওগুলোই পড়বো ( মাথা নিচু করে বললো)
নীল - যাও এখন,
দিয়া - আচ্ছা।

তারপর ওকে নিচে পাঠিয়ে দিলাম।
যত্তোসব, নিজের প্রতি কেয়ার নেই, আমার সাথে রাগ দেখায়।
প্রত্যেক মেয়েরেই উচিত রাস্তায় বোরকা বা হিজাব পরে চলা।
কারণ তাতে ওদের নারিত্ব বজায় থাকে।
অন্যথায় রাস্তায় পোলাপাইনে চেয়ে থাকবোই।
আর যখন হিজাব ছাড়া বের হয় তখন ছেলে গুলো তাকিয়ে থাকে তখন ওদের দোষ দেয়।
ওদের কোনো দোষ থাকে না। কারণ সুন্দর দেখলে সবাই তার দিকেই তাকিয়ে থাকে।

নারী হলো সৌন্দর্যের অন্যতম। তাই তাদের যতটা সম্ভব নিজেকে ঢেকে রাখা উচিত,
নয়তো নিজেকে অন্যর কাছে বিলিয়ে দিতে হয়।
তাই যতটা সম্ভব হিজাব পরে বা ধর্মীয় নীতি চলে রাস্তায় চলা উচিত।
নাহলে হিতের বিপরীত হবে।

এগুলো ভাবতে ভাবতে বিছানায় বসে পড়লাম। খুব রাগ হচ্ছে ওর উপর,
কোথাকার কোন মেয়ে, দুদিন আমাদের বাসায় থেকেই আমার জিনিস ভাঙচুর করছে।
মা ও কিছু বলে না,, কিন্তু আদর করে ওকে অনেক।
আর মার আদর পেয়েই ও একেবারে মাথায় চড়ে বসছে।

এভাবে চলে গেল ছয়মাস
এখন আমার মতো একটা পাওয়ার ফুল শয়তানও ওই পেত্নীটার কাছে হার মানতে বাধ্য।
কারণ এখন মার পিছু ছেড়ে আমার পেছনে থাকে।
সবসময় এখন আমার পেছনে ঘুরঘুর করে।
যতটা সময় অফিসে থাকি ততটা সময় শান্তি পাই।
বাড়িতে আসলেই দিয়া এসে ঘ্যানর ঘ্যানর শুরু করে দেয়।
আর পারা যায় না এ মেয়েটাকে নিয়ে। সবসময় বিরক্ত করে।
কি চায় ও?
আমাকে কেন শুধু বিরক্ত করে। মা এসব দেখে তবুও কিছু বলে না,,
আরও ওর সাথে তাল মেলায়, খুব রাগ হয় তখন।
এখন আবার তুমি করে বলা শুরু করছে। সাহস খুব বেড়ে গেছে।
রাত ১২ টার সময় ফোন দিয়ে বলে,,,
এই চলো না একটু ছাদে যাই

তখন ইচ্ছে করে নিচ তলায় গিয়ে,,
দিয়াকে তুলে নিয়ে দুতলা ছাদে থেকে ছুড়ে নিচে ফেলে দেই।
যত্তোসব উটকো ঝামেলা। খুব রাগ হয় ওর উপর।
তবুও কিছু বলতে পারি না। কারণ ওর পিছনে আমার বাবা মা আছে,,
একটু কিছু উচুঁ গলায় বললেই,, মার কাছে গিয়ে আরও বেশি করে বানিয়ে বানিয়ে বলে,,
তারপর মা আমাকে আচ্ছা করে বকে দেই,, সেইজন্য কিছু বলতে পারছি না।
শুক্রবার বিকেলে বাসার সামনে একটা ছোট বাগান আছে সেখানে বসে আছি।
কোথা থেকে যেন দিয়া এসে হাজির। একটা হলুদ শাড়ি পড়া।
খুব সুন্দর লাগছে ওকে, অন্য দিনের থেকে হাজার গুণ বেশি সুন্দর,,
কারণ এর আগে কখনো ওকে শাড়ি পড়া অবস্থায় দেখিনি তাই।

দিয়া - এই শুনো, আমাকে কেমন লাগছে?
নীল - ভালো।
দিয়া - শুধু ভালো।
নীল - একদম পরীর মতো।
দিয়া - সত্যিই? ( খুশিতে লাফিয়ে উঠলো)
নীল - হুম।
দিয়া - এইজন্যই তো আমি তোমাকে এতো ____
নীল - এতো কি?
দিয়া - না কিছু না।
নীল - বলো।
দিয়া - ভয় করে,, পরে বলবো।
নীল - আচ্ছা।
দিয়া - চলো ঘুরতে যাব।
নীল - না।
দিয়া - কেন?
নীল - আমার সাথে তুমি ঘুরতে যাবে কেন?
দিয়া - বারে,, তাতে কি হইছে?
নীল - অন্যরা কি ভাববো,, যে আমি বউ নিয়ে ঘুরতে বাইর হইছি।
দিয়া - হিহিহি, ভাবলে ভাববেই, সমস্যা কি? একদিন আগে আর পরে তো বউ হবোই।
নীল - মানে!!!
.
দিয়া - কিছু না, চলো তো এখন।
নীল - আমি যাব না, ব্যস।
দিয়া - কেন যাবে না,,, চলো না প্লিজ।
নীল - বলছি না যাব না ( ধমক দিয়ে বললাম)
ধমক দিয়ে বলার পর আর কিছু বলছে না,, চুপচাপ আমার সামনে দাড়িয়ে আছে।
চোখ দেখে বোঝা যায়, লাল হয়ে গেছে, এখনই কেদে দিবে,,
আর তখনই আমার এক কলিগের কল আসলো,,, মেয়েটাও আর সময় পাইলো না,,
এখন কল দিয়ে বসছে,, এমনেতেই মোড খারাপ।

তারপর কলটা ধরে অফিসের কাজ নিয়ে কথা বলতে বলতে দিয়ার থেকে দূরে চলে গেলাম।
আর দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
ফোনে কথা বলা শেষে,
ফোন রুমে বিছানার উপর রেখে বাথরুমে গেলাম।
বাথরুম থেকে এসে আমার বস কে একটা কল দিব, তাই ফোনের কাছে গেলাম,,
একি ফোন কই গেল? যেখানে রাখছি সেখানে নেই,,
আমার বিছানার পাশে রাখা মগ থেকে বুদবুদের শব্দ শুনতে পেলাম।
ওটার কাছে গিয়ে দেখি,, আমার ৩০ হাজার টাকার ফোন,, পানিতে পরে সাতার কাটছে।
ও মাই গড, এটা কি হলো? কে করলো এ কাজ? ধপাস করে ফ্লোরে বসে পড়লাম।
বাইরে থেকে হাসির শব্দ শুনতে পেলাম,, গিয়ে দেখি দিয়া। বুঝতে পারলাম ওই করছে এ কাজ।
ঠাস করে একটা, রাগের বশে জোরে চড় দিলাম। খুব বেড়ে গিয়েছে ও।
তারপর দেখি আমার চোখের দিকে তাকালো,, তারপর কান্না করতে করতে চলে গেল।
আমার চোখ তখন রাগে লাল হয়ে গেছে।
তারপর আর সেদিন আমার সামনে আসেনি।
তারপরের দিন একবার না দুইবার সামনে পড়ছিল কিন্তু কিছু বলেনি,,
আরও আমাকে এড়িয়ে চলে গেছে। এতে দিনে তাহলে শিক্ষা হইছে।
আমিও আজ একটু শান্তি পাইলাম।

চলবে...

No comments