Breaking News

বিয়ে ছাড়াই বউ । পর্ব -০১

ঘরে বসে গেমস খেলছি। আর গান শুনছি,, তখনই মা এসে ডাক দিল,,

মা - নীল, দেখতো বাবা কে আসছে,
নীল - কই, কে আসলো?
মা - কলিং বেল চাপছে।
নীল - আচ্ছা দেখছি।
অফিস বন্ধ, কই একটু নিজের ইচ্ছেমত কিছু করবো,
তা রেখে এখন যেতে হচ্ছে কে আসছে সেটা দেখতে!!
দরজা খুললাম। দরজা খুলেই দেখি এক মধ্য বয়স্ক মহিলা,,
নীল - আসসালাম অলাইকুম আন্টি,,
আন্টি - অলাইকুম আসসালাম,,
নীল - আপনাকে তো চিনলাম!
আন্টি - একি তুমি জানো না?
নীল - কি জানবো।
.
আন্টি - তোমাদের নিচতলায় ভাড়ায় আসছি আমরা।
আর আজকে আমাদের এ বাসায় উঠার দিন, তাই দেরী না করে সকাল বেলায়ই এসে পড়লাম।
নীল - ওহ্,, হ্যাঁ, মা তো আমাকে বলছিল কিন্তু আমারই মনে নেই। ভেতর আসুন।
.তারপর আমার ক্লাশ অফ ক্লান গেমস রেখে ওনাদের হেল্প করতে লাগলাম।
আমাদের বাড়ি টা দুতলা। আর আমরা দুইতলায় থাকি। আমি মা আর বাবা।
তিন জনের পরিবার।
.
আমি আর বাবা দুজনেই চাকরি করি। আমি কেবল ৩ মাস হলো জয়েন্ট করছি।
পড়াশুনা শেষ করে আর দেরী করিনি, বাবার সাহায্য নিয়ে চাকরিতে জয়েন্ট করছি।
এখন বাবা ছেলে দুজনেই চাকরি করি।
নিচতলাটি ফাকাঁ পরে আছে তাই ওটা ভাড়া দিয়ে দিছে।
আর শহর অঞ্চলে এখন প্রায় সবাই বাসা খুজে,, যারা অন্য জায়গায় থেকে আসে।
নতুন ভাড়াটিয়া মাত্র তিনজন দেখতে পেলাম,,
আন্টি, চাচা আর একটা বাচ্চা মেয়ে,, ছোট ঐ সাত আট বছরের হবে।
মালপত্র গুছিয়ে দিতে দিতে বললাম,,
নীল - আন্টি আপনারা কি এই তিনজনই থাকবেন?
আন্টি - না বাবা!! আমার বড় মেয়ে আসবে বিকেলে।
তারপর আবার কালকে এখানকার কলেজে ভর্তি হবে।
নীল - ওহ্।
.
আন্টি - তুমি একটু দেখো বাবা,, নতুন জায়গা কাউকে চিনি না,,
আর কলেজের বেশী কিছু বুঝিও না। তুমি একটু সাহায্য কইরো।
নীল - আচ্ছা দেখা যাবে।
তারপর আমি বাকি কাজ করে আমি আমার রুমে চলে আসলাম।
তিনদিনের ছুটি পাইলাম, তবুও এ কদিন বোধ হয় ওনাদের কাজ করতে হইবো।
অফিসের কাজ আবার বাসার কাজ, শুধু কাজ আর কাজ।
রুমে এসে কতখন টিভি দেখে আবার শুয়ে পড়লাম। শুধু ঘুম আসে।
উঠলাম একেবারে বিকেল বেলা।
বিকেলে উঠে ভাবলাম একটু বাইরে থেকে হাটাহাটি করে আসি।
তাই চললাম বাইরে ঘুরতে।
দরজা থেকে বেরিয়েই একটা ছোট্ট ধাক্কা খেলাম।
ধাক্কা টা আমার কাছে ছোট মনে হলেই আরেক জনের কাছে হয়তো বড় মনে হইছে।
কারণ আমি তো ইয়ং ম্যান,, আর ওটা হয়তো কোনো মেয়ে থাকবে।
দিয়া - ওই চোখে দেখেন না?
নীল - দেখি তো।
দিয়া - ঘোড়ার ডিম। কি দেখেন হ্যাঁ?
নীল - আমার সামনের পরীটা দেখি।
দিয়া - হোয়াট?
নীল - সরি, কিছু না।
.
দিয়া - যত্তোসব,, আপনি দেখেন না,
আমি দরজা দিয়ে ঢুকছি তবুও আপনি একসাথে বের হলেন কেন?
নীল - আপনি চোখে দেখেন না, আমি দরজা দিয়ে বের হচ্ছি, তবুও ঢুকলেন কেন?
দিয়া - ধ্যাত, পাগল কোথাকার, সরুন!!!
নীল - আচ্ছা, জান।
দিয়া - হোয়াট জান,,
নীল - শুধু শুধু, হোয়াট হোয়াট করেন কেন?
আপনি কি আমার পারসোনাল কেউ নাকি যে জান বলবো। আমি বলছি যান।
তারপর ওনাকে ভেতর যেতে দিয়ে আমি বাইরে চলে গেলাম।
মনে হয় এটাই আন্টির বড় মেয়ে। অনেক সুন্দর কিন্তু খুব রাগী টাইপের,,
দেখেই বোঝা যায়।
তারপর একটু বাইরে হাটাহাটি করে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে,
দরজার সামনে আসতেই আবার সেই নাম হারা পরীর সামনে।
নীল - এইযে চাপুন, দরজার সামনে কি করেন।
দিয়া - আপনি এখানে এই সন্ধ্যা বেলা কি জন্য আসছেন?
নীল - ভেতর যাব তাই আসছি।
দিয়া - ভেতর যাবেন কেন হ্যাঁ?
নীল - আমার বেহুঁশ হবার অবস্থা, ভুল করে আবার কার বাসায় চলে আসলাম আচ্ছা, চলে যাচ্ছি।
দিয়া - যান।

তারপর আবার গেটের সামনে চলে আসলাম।
তখন গেটে তো ঠিক নামই দেখলাম, আমার বাবার নাম দেওয়া আছে,,,
তারপর আবার দরজার সামনে গেলাম।
গিয়ে দেখি, ওই মেয়ে আর মা বসে আছে দরজা থেকে একটু ভেতর,,
আমাকে দেখতে পেয়েই মা বললো,,
মা - নীল, এতো সময় কই ছিলি?
নীল - বাইরে।
মা - এতখন বাইরে কি?
নীল - বাসা খুজতে ছিলাম।
মা - কার বাসা?
নীল - আমার।
মা - পাগল হইলি কবে?
নীল - এই একটু আগে।
মা - চুপ, রুমে যা।
নীল - আচ্ছা,,,,,,,,
দিয়া - আন্টি ওনি কে?
মা - আমার একমাত্র ছেলে।
দিয়া - কিইইইই?
মা - কেন? আগে দেখোনি?
.
দিয়া - বিকেলে দেখছিলাম বাসায়,, বাসা থেকে বের হচ্ছিল তাই ভাবছি
অন্য বাসার কেউ হবে হয়তো।
মা - হিহিহি,,,,,,,,
মা আর ওই বজ্জাত মেয়ের এই টুকু কথা শুনেই এসে পড়লাম।
আমাকে বাইরের ছেলে ভাবার কি আছে? আমাকে দেখে কি এ বাসার ছেলে মনে হয় না?
এভাবে পাঁচ দিন চলে গেল। এই পাঁচদিনে ওদের সাথে আমাদের খুব ঘনিষ্ঠতা হয়ে গেছে।
ওই মেয়ে সবসময় মার পেছনে পরে থাকে আর সবসময় কি যেন গুজুর গুজুর করে দুজনে মিলে।
কিন্তু আমি এখন এগুলো তোয়াক্কা করি না, আমার মতো আমি আছি।
তারপর শনিবার সকালে ঘুমিয়ে আছি।
ভাবছি আজ অফিসে যাব না, শরীর টা একটু খারাপ লাগছে তাই।
কিন্তু কাউকে বলিনি।
.
মা - নীল, অফিস যাবি না।
নীল - না মা।
মা - তাহলে একটা মহিলা কলেজে যা তো।
নীল - মহিলা কলেজে গিয়ে কি করবো? আমি মহিলা নাকি?
মা - দিয়াকে নিয়ে যা।
নীল - হেইডা আবার কেডা?
মা - ভালভাবে কথা বল।
নীল - ওকে ওকে,,
মা - তোর আন্টির বড় মেয়ে।
নীল - ওহ্, তাইলে ওই ঢংগীটার নাম দিয়া!!
মা - চুপ,, ওরে নিয়ে যা।
নীল - কেন?
মা - ভর্তি হইবো তাই।
নীল - সেদিন না ভর্তি হওয়ার কথা ছিলো?
মা - সেদিন হয় নাই,, আজকে হইবো।
নীল - আচ্ছা, দেখা যাবে।
মা - তাড়াতাড়ি।
.
ও মাই গড, এখন কি এই মেয়ে মানুষ ক্ষ্যাপাতে হইবো নাকি?
একা যাইতে পারে না। আবার আমারে সাথে নিতে হইবো।
এই কদিনে একেবারে মার মাথায় চড়ে বসছে।
কিভাবে যে মেয়ে গুলো এতো তাড়াতাড়ি করে আরেক জনের সাথে মিশতে পারে কে জানে?
অনিচ্ছাকৃত ভাবে উঠতে হলো,,
ডাইনিং টেবিলের কাছে এসে দেখি সে আগেই রেডি হয়ে আছে
আর বসে বসে আমার প্লেটে রাখা ডিমে ভাগ বসাইছে।
নীল - আমার ডিম খাইলেন কেন?
.
দিয়া - আমি আপনার ছোট, সো তুমি করে বলাই বেস্ট।
নীল - ওকে ওকে, ডিম কই?
দিয়া - কই আবার,, আমি খাইছি।
নীল - তোমার টা তো খাইছই আবার আমার টায় ভাগ বসাইছো কেন?
দিয়া - এমা আর কই পর থেকে যার সবকিছুতেই অধিকার স্বরুপ
ভাগ বসাবো তারটায় তার আগেই একটা ডিমে ভাগ বসাইলে কি হইবো?
নীল - হোয়াট?
দিয়া - কিছু না।
নীল - উল্টো পাল্টা কিছু বলবে না কিন্তু।
দিয়া - তাড়াতাড়ি খান তারপর চলুন।
নীল - আচ্ছা।
তারপর ফ্রেস হয়ে, খাওয়া শেষ করে ওকে নিয়ে বের হলাম।
আবার রাস্তায় এসে, যখন গাড়িতে চড়বো তখন,,
দিয়া - এই একটা রিক্সা ডাকুন তো।
নীল - সিএনজিতে যাব।
দিয়া - না, রিক্সায় যাব।
নীল - রিক্সায় কেন?
দিয়া - এমনি।
নীল - আইচ্ছা।

চলবে,,

No comments