Breaking News

বিয়ে ছাড়াই বউ । পর্ব -০৩ এবং শেষ

 

এক সপ্তাহ কেটে গেল কিন্তু এখনো ও আমার সাথে কথা বললো না,,
আমার সামনেও আসলো না।
আসলেও আরও এড়িয়ে চলে যেত।
সেদিন মারা বোধ হয় ঠিক হয়নি।
এখন খুব খারাপ লাগছে।
যে মেয়ে সবসময় আমার পিছনে পরে থাকতো আমাকে বিরক্ত করতো,
আজ এতোদিন হয়ে গেল একটা কথাও বলেনি।
খুব মিস করছি এখন পাগলীটার পাগলামী গুলো।

ভাবলাম কাল একটা ওর জন্য অফিস থেকে আসার সময় গিফট আনবো
আর তারপর ওকে দিয়ে সরি বলবো
সকালে উঠে ওদের কারও কোনো সাড়াশব্দ পেলাম না।
তাই আমি শুধু অফিসে চলে গেলাম।
বিকেল ৫টায় অফিস থেকে আসলাম,,,
গিফট টা পিছনে লুকিয়ে বাসায় ঢুকে দিয়ার রুমের দিকে গেলাম, ""
রুমে গিয়ে দেখি কেউ নেই।
মনে বাইরে ঘুরতে গেছে,,, মা কে বলে দেখি, কই গেছে ওরা?
মার রুমে গিয়ে দেখি চুপ করে বসে আছে খাটের উপর,,,
নীল - মা দিয়া কই গেছে?
মা - ওরে দিয়ে কি করবি?
নীল - বলো তো।
মা - চলে গেছে।
নীল - কই গেছে?
মা - আমাদের বাসা ছেড়ে অন্য জায়গায়।
নীল - মানে!!!
মা - আজ দুপুরে গেছে।
নীল - কি বলছো তুমি?
মা - হুম, জানিস বাবা মেয়েটাকে একদম নিজের মেয়ে ভেবেছিলাম,,,
ভাবছিলাম তোর বউ করে সারাজীবন এখানেই রেখে দিব।
কিন্তু কোনো কারণ না বলেই হুট করে চলে গেছে।
দিয়ার নাকি আর এ বাসায় ভালো লাগে না।
নীল - ওহ্,, কিন্তু আমাকে বলার প্রয়োজন মনে করলো না।
মা - আমি কি করবো বল?
ধীর পায়ে আমার রুমে গেলাম।
গিয়ে দেখি আমার বিছানার উপর ভাঙা জোড়া দেওয়া আগের সেই ফুলদানি টা।
আর ওটার ভেতর একটা কাগজ,, পড়তে বসলাম।
প্রিয় নীল বাবু,,

জানি না তুমি আমাকে কি ভাবো,,,
কিন্তু আমি তোমাকে নিয়ে ভালবাসার কথা ভাবতাম।
আমি তোমাকে সেই প্রথম থেকেই ভালবাসি।
কিন্তু কখনো বলিনি,, ভাবছি তুমিই আমাকে বলবে।
তাই আমি সবসময় তোমাকে বিরক্ত করতাম, তোমার কাছে যাওয়ার জন্য।
যাতে তুমি আমাকে ভালবাসো।
কিন্তু এতদিনে আমার একবারও মনে হয়নি তুমি আমাকে ভালবাসো।
আর যেদিন আমাকে মারলে, সেদিন আমি একেবারে শিউর হইছি,,
তুমি আমাকে একটুও ভালবাসো না, শুধু ঘৃণা করো।
তাই ভাবলাম ভালবাসার মানুষের ঘৃনা নিয়ে কয়দিন তার সামনে থাকা যায়।
চলে যাওয়াই ভালো। তাই তোমাকে না বলে চলে আসলাম।
এতদিন অনেক বিরক্ত করছি প্লিজ ক্ষমা করে দিও,,
আর কোনো দিন তোমার সামনে আসবো না। ভালো থেকো।
ইতি,,
তোমার জন্য পাগলী হইছিলাম,,,
বিরক্ত করণী দিয়া।
ওটা পড়ে কেন যেন এখন খুব কষ্ট হচ্ছে।
যে মেয়েটা আমাকে এতো ভালবাসে
আর আমার একটু ভালবাসা পাওয়ার জন্য সবসময় আমার পেছনে ঘুরঘুর করতো
আর আমি তাকে এভাবে অবহেলা করছি,,,
এখন আমার নিজের উপরই খুব ঘৃনা হচ্ছে।
এখন কই পাব ওকে।
এভাবে ২ সপ্তাহ চলে গেল। তবুও ওকে পাচ্ছি না। অনেক খুজলাম,, খুব মিস করছি ওকে। আমিও এখন ভালবেসে ফেলছি।
তারপর মাথায় আসলো, মার ফোনে দিয়ার নাম্বার আছে।
নাম্বার খুজে বের করে আমার টা দিয়ে কল দিলাম। একটু সময় রিং হওয়ার পর, ধরলো,,,
নীল - হ্যালো দিয়া।
দিয়া - আপনি কে?
নীল - নীল।
দিয়া - ফোন দিছেন কেন?
নীল - একটু দেখা করো প্লিজ।
দিয়া - ক্ষমা তো চেয়েই নিছি। আবারও মারতে চান।
নীল - এভাবে বলো না প্লিজ। দেখা করো একটু।
দিয়া - দেখা করে কি করবেন?
নীল - আগে আসো।
দিয়া - আচ্ছা।
.
তারপর জায়গা বলে দিলাম কই আসবো।
ভাগ্য ভালো পাগলী রাজি হইছে আসতে নয়তো আমি হয়তো মরেই যেতাম।
তার পরের দিন কয়েক টা গোলাপ ফুল নিয়ে হাজির হলাম আমাদের দেখা করার জায়গায়।
দেখি ও আগেই আসছে।
নীল - দিয়া এভাবে চলে আসছো কেন?
দিয়া - এমনি! ( নিচু স্বরে, আস্তে করে)
নীল - আমাকে ভালবাসো এখনো?
দিয়া - ইয়ে মানে!
নীল - বলো।
দিয়া - হুম।
নীল - ফিরে আসবে আমার কাছে?
দিয়া - কিন্তু আপনি তো ভালবাসেন না।
নীল - আপনি হলাম কবে? আগে না তুমি করে বলতে।
দিয়া - সরি।
নীল - আর কে বলছে আমি তোমাকে ভালবাসি না।
দিয়া - আপনার ব্যবহারেই বুঝছি।
নীল - ইচ্ছে করছে এখন আরেক টা থাপ্পড় দেই।
দিয়া - দিতে সমস্যা কই?
নীল - চুপ,,,,
আই লাভ ইউ ( হাটু গেড়ে প্রপোজ করলাম)
দিয়া - ফাজলামো করেন?
নীল - হোয়াট ফাজলামো হ্যাঁ?
দিয়া - এইযে আমাকে ভালবাসেন।
নীল - এতে ফাজলামোর কি আছে।
দিয়া - আচ্ছা ভালো নাই বাসলাম, বিয়ে করবো চলো।
নীল - বিয়ে কেন?
দিয়া - এমনি।
নীল - কিন্তু,
.
দিয়া - কোনো কিন্তু নয় (হাতটা ধরলাম)
পাগলী জানো এ কয়দিন কত কষ্টে ছিলাম?
দিয়া - কেন কষ্টে ছিলা হ্যাঁ? ( কান্না সুরে)
নীল - তোমাকে ছাড়া।
দিয়া - তাহলে মারছিলে কেন? না মারলেই তো আর আসতাম না।
নীল - ফোন চুবানি দিছিলা কেন?
দিয়া - ওই মেয়ের সাথে কথা বলছিলা তাই।
নীল - বাব্বা এতো রাগ?
দিয়া - অনেক ভালবাসি, তাই কারও সাথে আর কথা বলতে দিব না, হু। ( বুকে মাথা রেখে কাদতেঁ লাগলো)
নীল - এই পাগলী কাঁদছো কেন?
দিয়া - আর মারবে না তো?
নীল - বিয়ে করে নেই তারপর দেখা যাবে।
দিয়া - শয়তান আমি তোমার বউ হবো না।
নীল - তাহলে,,,
দিয়া - আমি নীলের বউ হবো, নীল ভালো। তুমি পচা।
নীল - হিহিহি, পাগলী একটা।
দিয়া - তোমার।
নীল - বাসায় চলো।
দিয়া - তুমি যাও,, আমি একা যেতে পারবো।
নীল - জ্বী না,,, তোমাকে সোজা আমার বাড়ি নিয়ে যাব।
দিয়া - মা কে তো বলি নাই।
নীল - পরে ফোন করে বলবে আমি আমার বরের বাড়ি চলে এসেছি,
তুমি তোমার বিয়াই বাড়ি চলে আসো।
দিয়া - পাগল একটা।
নীল - চলো।
দিয়া - আচ্ছা।
নীল - হাতটা ধরি?
দিয়া - ধরেই তো আছো।
নীল - আরও শক্ত করে।
দিয়া - ব্যথা যেন না পাই।
নীল - আচ্ছা।
অতঃপর বিয়ে ছাড়াই বউ নিয়ে বাড়ি আসলাম😍

<> সমাপ্ত <>

No comments