Breaking News

ওসির অহংকারী মেয়ে । পর্ব -১৬

আকাশ,এই ওসি হেনা কই তাড়াতাড়ি বল?না হয় তোর লাশ বের হবে আজ এই থানা থেকে..

ওসি,ঝাপটি মেরে আকাশের পায়ে পড়ে যায়,আকাশ ভাই আমাকে মাফ করে দেন...
আকাশ,এই ওসি তুই মাফ চাচ্ছিস কেন?
তোর মাফ চাওয়ার কিছুই নাই,আমার শুধু হেনাকে চাই,
না হয় তোর আজ কি হাল করবো তুই নিজেও ভেবে পাবি না...
ওসি,আকাশ ভাই প্লিজ আপনি শান্ত হোন,আমি হেনার কাছে নিয়ে যাচ্ছি আপনাকে,থানার সবাই এখনো হা হয়ে তাকিয়ে আছে দুজনের দিকে,ওসি করছে টা কি সামান্য একটা ছেলের পায়ে ধরে বসে আছে,কে এই ছেলে কারোর মাথায় যেনো কোনো কিছু ঢুকছে না,
--ওসি আকাশকে নিয়ে ওর বাড়িতে যায়,
আকাশ,হেনা কই?
ওসি,ভাই ঐ রুমটাতে আছে,
আকাশ,কোনো কথা ছাড়াই রুমের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে যায়,তারপর সে দরজা লক করে দেয়,আকাশের তো মাথা ভর্তি রাগ,সে আজ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর চাইবে....
হেনা,খাটের উপরে পা মেলে বসে আছে,সে আকাশকে দেখে তো থতমত খেয়ে যায়,এই এই তু তু তুমি?
আকাশ,হা আমি,কেন অন্য কারোর আশার কথা ছিলো নাকি?
হেনা,আকাশ কি সব বলছো উল্টো-পাল্টা?
আর তুমি এখানে কেন এসেছো,প্লিজ চলে যাও এখান থেকে,তোমার সাথে আমার সমস্ত সম্পর্ক বহু আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে,তোমার চেহারাও আমি দেখতে চাই না প্লিজ চলে যাও এখান থেকে...
আকাশের তো মেজাজ গরম হয়ে যায়,সে গিয়ে হেনাকে ধাক্কা দিয়ে খাটের উপরে ফেলে দেয় আর গলা চিপে ধরে,এই মেয়ে তোর কথায় কি আমি এখান থেকে চলে যাবো নাকি?
.
অনেক কষ্ট দিয়েছিস তুই আমাকে,তোর সাথে হিসাব চুকানো বাকি এখনো আমার,আজ সমস্ত শোধ তুলবো আমি তোর থেকে,ছয়টামাস পুরো পাগল ছিলাম আমি,তোর চিন্তায় আমার রাতের ঘুম পর্যন্ত হারাম হয়ে গিয়েছে,তুই আমার সাথে এমন ধারা ছলনা করলি কি ভাবে,তার জওয়াব আজ তোকে দিতে হবে কুত্তার বাচ্চা,
--আকাশ হেনাকে ছেড়ে দিয়ে কোমর থেকে বেল্ট খুলতে আরম্ভ হয়ে,তোর শরীর থেকে আজ আমি হাড্ডি মাংস আলাদা করে ফেলবো..
হেনাতো ঐ অবস্থায় এই খাটের উপরে জড়োসড়ো হয়ে পড়ে আছে,চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি ঝরছে,কি করনীয় এখন তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না..
আকাশ,বেল্ট টা খুলে হাতে নিয়ে হেনাকে ইচ্ছে মত মারতে আরম্ভ করে,হেনা ব্যথার তাড়নায় মুখ চেপে কান্না করছে,আর আকাশের কাছে মিনতি করছে প্লিজ আকাশ আমায় ছেড়ে দাও,আমার খুব কষ্ট হচ্ছে,কিন্তু নাহ আকাশের ছাড়ার কোনো নাম গন্ধ নাই,সে আজ মানুষ থেকে পশুতে রূপান্তরিত হয়েছে,সে হেনাকে বেল্ট দিয়ে মেরেই চলেছে..
বেল্টের বাড়ির চোটে হেনার শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে ফেটে রক্ত বের হচ্ছে,ঠোঁট তো কেটে রক্ত লাল হয়ে গিয়েছে একদম,হেনার বাবা -মা বাহির থেকে মিনতি করছি প্লিজ আকাশ ভাই আমার মেয়েটাকে ছেড়ে দিন,সে মরে যাবে,
আকাশ,একটা পর্যায়ে সে নিজে কান্না করে দেয় হেনার অবস্থা দেখে,
বিশেষ করে ঠোঁট কেটে রক্ত পড়ছে,আকাশ এটা দেখে চেঁচিয়ে কান্না করে দেয়,
হাত থেকে বেলটা ফেলে দিয়ে হেনাকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে,কলিজা তুই এটা কেন করলি,
তুই কি জানিস না তুই ছাড়া যে আমার বিশ্বাস নেওয়া পর্যন্ত দায় হয়ে গিয়েছে,
তোকে ছাড়া একটা নিশ্বাস নেওয়ার কথা পর্যন্ত চিন্তা করতে পারি না আমি,
তোর যদি সত্যি কিছু হয়ে যেতো তাহলে আমি কি ভাবে বেঁচে থাকতাম বল?
কি কারনে তুই আমাকে এতটা কষ্ট দিলি?
.
হেনাও কান্না করছে আকাশকে জড়িয়ে ধরে,কলিজা এমনটা করেছি বলে আজ তুমি জীবিত আছো,
না হয় তোমাকে ও মেরে ফেলতো,
তোমার ভালোর জন্যই আমি এমন একটা নাটক করে তোমার থেকে দূরে সরে গিয়েছি,
কারন তোমার ক্ষতি হোক এটা আমি চাই না,দরকার হয় দূর থেকে ভালোবাসবো,
তাও তোমার ক্ষতি হতে দেই কি করে বলো,
আকাশ,হেনা তুমি কি বলছো আমার তো কিছুই ঢুকছে না মাথায়,
কিসের ক্ষতির কথা বলছো,আর আমাকে কে মেরে ফেলতো...?
হেনা,চুপ করে আছে....
আকাশ,প্লিজ হেনা বলো,এভাবে চুপ করে থেকো না,
কে আমায় মারতে চায়,যার জন্য তুমি আমার থেকে এতদূরে সে গিয়েছো?
হেনা,আকাশকে ছেড়ে দিয়ে শুনো তাহলে,তোমাকে শুরু থেকে সমস্তটা বলি,
আরু তোমায় মেরে ফেলতে চায়!
আকাশের তো হুঁশ এই উড়ে যায় হেনার কথা শুনে,
কি বলছো হেনা এটা কি করে সম্ভব,আর আরুই বা আমাকে কেন মারতে চাইবে...
হেনা,কারন তুমি জাফর ইকবালের নাম শুনেছো,জিনি বাংলাদেশের টপ বিজনেসম্যান ছিলো একটা সময়,যাকে তোমার বাবা টক্কর দিয়ে ১ম পজিশন দখল করেছে?
আকাশ,হা চিনি কিন্তু উনার সাথে আরুর সম্পর্ক কি?
আর জাফর ইকবাল তো মারা গিয়েছেন....
হেনা,আরু কে জানো?
আরু হচ্ছে জাফর ইকবাল সাহেবের মেয়ে,সে তোমার উপরে প্রতিশোধ নিতে চায়...
আকাশের তো চোখ বড় বড় হয়ে যায় হেনার কথা শুনে,
কিন্তু কেন?আমি ওর কি ক্ষতি করেছি?
.
হেনা,তুমি ক্ষতি করোনি,কিন্তু তোমার বাবা করেছে,
জাফর ইকবাল সাহেব দীর্ঘ বহু বছর দেশের মধ্যে টপ বিজনেসম্যান এর তালিকায় ছিলো,
যাকে তোমার বাবা হারিয়ে দিয়ে ১ম পজিশন দখল করে,
এটা জাফর ইকবাল সাহেবের সহ্য হয়নি,তিনার থেকেও শীর্ষে কেউ পৌঁছে গেছে
এটা তিনি মানতেই পারেন নি,যার কারনে তিনি ডিপ্রেশনে চলে যায়,
পরে একটা সময় দেখা যায় তিনি অতিরিক্ত ডিপ্রেশনে যাওয়ার ফলে হার্ট এটাক করে মারা যায়,
উনার বাসার সবাই জানতো উনার পজিশন অন্যকেউ দখল করার ফলে
তিনি ডিপ্রেশনে চলে যায়,আর তার থেকে হার্ট এটাক করে,তাই তিনার বড় মেয়ে আরু শপথ
করে যাদের কারনে উনার এই অবস্থা হয়েছে,তাদের কাউকে শান্তি দিবে না সে...
জাফর ইকবাল সাহেবের মৃত্যুর জন্য সবাই তোমার ফ্যামেলিকেই দায়ী করছিলো,
তাই আরু কাজে নেমে পড়ে তোমাদের জীবন থেকে সুখ নামক বস্তুটাকে মুছে দিতে,
আরু বহু আগে থেকেই সুযোগ খুঁজলিছো যে তোমাদের জীবন থেকে সুখ কি ভাবে কেড়ে নিবে,
কিন্তু কোনো ভাবেই তার চিন্তাধারাকে বাস্তবায়ন করতে পারছিলো না,

.
এমন সময় মুরগী নিজে গিয়ে ধরা দেয়,আর সেই মুরগী হচ্ছো তুমি,
আরু যেই কলেজে পড়ে তুমি নিজেই সেই কলেজে গিয়ে ভর্তি হলে,
তারপর কি আর ব্যছ আরু কাজে নেমে পড়লো তোমার পিছনে,
সে চেয়েছিলো তোমাকে পটিয়ে তোমার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করবে,
আর তোমার পরিবার থেকে সুখ কেঁড়ে নিবে,সে তোমাকে কাবু করার আগেই
তোমার সাথে আমার সম্পর্ক হয়ে যায়,এটা সে কোনো মতেই মানতে পারছিলো না,
পরে সে লোক দিয়ে আমাকে জিম্মি করে,আর বলে আমি যদি তোমার জীবন থেকে দূরে
সরে না যাই সে তোমাকে মেরে ফেলবে,এটা শুনে আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম,
আর যখন জানলাম সে জাফর ইকবাল সাহেবের মেয়ে,
তারপর তো আমার ভয়ের মাত্রা আরো বেড়ে গেলো,তখন আমি তাকে বলেছি যে
আমি তোমার জীবন থেকে সরে যাবো,কিন্তু সে তোমার আর তোমার পরিবারের কোনো ক্ষতি
করতে পারবে না,সে তো তোমার জীবন থেকে ভালোবাসা নামক সুখটা কেঁড়ে
নিয়েছেই,তাহলে তার আর কি চাই,তবে তোমার আচার-ব্যবহার দেখে তোমার উপর
থেকে তার ক্ষোভ টা কমে যায়,তাই সেও আমার সর্তে রাজি হয়ে যায়,
সে আমায় কথা দিয়েছিলো,যে তোমার কোনো ক্ষতি সে করবে না,
তাই তোমার থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম,কিন্তু আমি জানি তুমি আমায় কখনো দূরে যেতে
দিবে না,তাই মৃত্যুর নাটক করি বাবা-মার সাহায্য নিয়ে,যাতে করে তুমি আমায় একদম
ভুলে যাও,কারন কলিজা তোমার কোনো ক্ষতি হোক সেটা আমি মরে গেলেও চাই না,
তবে আরুও ভাবতে পারে নাই আমি এমন কিছু করে বসবো,
আরু ধরে নিয়েছে আমি মরে গিয়েছি,তাই সে তোমার থেকে দূরে সরে যায়,
কারন প্রতিশোধ সে নিয়ে ফেলেছে তোমার জীবন থেকে আমাকে একদম চিরতরে সরিয়ে দিয়ে,
আকাশের তো কান্নায় চোখ গুলো ঘোলাটে হয়ে আসছে হেনার কথা শুনে,হেনা তুমি আমার ভালোর জন্য এতকিছু করলে,আর সেই আমিই তোমাকে না জেনে বেরেহেম ভাবে বেল্ট দিয়ে মারলাম,
কলিজা আমায় মাফ করে দাও..?
হেনা,এই আকাশ কি বলছো এই সব,প্লিজ এভাবে বলো না আমার খুব কষ্ট হয়,
আকাশ,সাথে সাথে হেনাকে ঝাপটে ধরে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নেয়,
আর বলে কলিজা এই দুনিয়ায় আমার থেকে তোকে কেউ আলাদা করতে পারবে না,
তুই শুধু আমার আর কারোর না,তোর সমস্ত কিছুর উপরে
শুধু আমার অধিকার আছে,আর কারোর কোনো অধিকার নাই,দুজনেই কান্না করছে,
তবে হা এটা কোনো দুঃখের কান্না না,এটা শুখের কান্না...
--তবে ভিতরে ভিতরে আকাশের ক্ষোভ জন্ম নিয়ে নিয়েছে,সে আরুর বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে,
আরু তুই খালি ওয়েট কর,তুই আমার জীবনের সুন্দর দিনগুলো নষ্ট করেছিস,
আমার জীবন থেকে সুখ কেঁড়ে নিতে চেয়েছিস,
এবার আমি তোর রুহু টাই শরীর থেকে বের করে ফেলবো....
.
চলবে...

No comments